
মাসুদ রানা:
চলমান করোনা যুদ্ধে একেবারে সামনের সারিতে থেকে লড়াই করে যাওয়া নীরব যোদ্ধাদের একজন জাকির আহমেদ।
প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মানবসেবায় নিজেকে মেলে ধরেছেন।কখনো মানুষকে করোনার ভয়াবহতা বোঝাতে ছুটছেন, আবার কখনো হতদরিদ্র পরিবারের খাদ্য চাহিদা পূরণে কাজ করছেন। স্থানীয় খেলার মাঠে তরুণ প্রজন্মের সদস্যদের সাথে মাঝে মধ্যেই করতে হচ্ছে চোর পুলিশ খেলা। অনেক সময় আবার তাকে দেখা যাচ্ছে জনসচেতনতায় প্রহরীর ভূমিকায়।বলছি রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জের আগানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির আহমেদ এর কথা। একাধারে তিনি গীতিকার, সুরকার, সমাজসেবক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষানুরাগী,ক্রীড়া সংগঠক ও আইনজীবী। স্থানীয় এবং জাতীয় বিভিন্ন সাংগঠনিক সংগঠনে রয়েছে তাঁর অবাধ বিচরণ।

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে আগানগর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের পাড়া- মহল্লার প্রতিটি অলিগলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রতিনিয়ত। দেশের রেডিমেড তৈরি পোশাকের চাহিদা পূরনের সিংহ ভাগ উৎপাদিত হয় এই এলাকায়।
অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই নিম্নবিত্ত এসব শ্রমিকদের সাবধানতা বাড়াতে প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন এই মানুষটি।
জাকির আহমেদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন কেউ না খেয়ে থাকবে না। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই আমি রাস্তায় বের হয়েছি। স্থানীয়দের বলেছি আপনারা ঘরে থাকুন আমি রাস্তায় আছি। যখন যা প্রয়োজন হবে আমি সাধ্যমত সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।
প্রতিদিন স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে উপহার সামগ্রী প্রত্যাশীদের তালিকা করে যতো দ্রুত সম্ভব তা পৌঁছে দিচ্ছি রিকশা চালক, ভ্যান চালক, হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত মানুষের ঘরে ঘরে। এছাড়া সরকারের দেয়া সহযোগিতার পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সামর্থ্যের মধ্যে সহযোগিতা করে চলেছি।
তিনি আরও বলেন, এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়াও যারা ভাড়া থাকেন, মধ্যবিত্ত আছেন তাদের সহযোগিতা করার জন্য আমি আলাদা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। তারা যোগাযোগ করলেই আমি তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেচ্ছি।
আগানগর ছোট মসজিদের পাশে ভাড়া থাকেন ফরিদ আহমেদ। তিনি বলেন, কয়েকমাস বাসায় থেকে জমানো অর্থ অনেকটাই শেষ। এই পরিস্থিতিতে লোকচক্ষুর আড়ালে জাকির ভাইকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে তিনি গোপনে আমার বাসায় খাবার পৌঁছে দিয়েছেন।
জাকির আহমেদ জানান, আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্য বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ এর নির্দেশনা ও সহযোগীতায় ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে দরিদ্র, দিনমজুর, কৃষক ও দুঃস্থদের খাবার বিতরন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। যা আগামী দিনগুলিতেও চলবে। এছাড়াও করোনা প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে কাজ করছে তূনমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সবাইকে সচেতন করতে প্রচারণা অব্যাহত রেখেছি।

মরনঘাতী এই ভাইরাসের কবল থেকে জনসাধারণকে রক্ষা করতে সকলকে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার আহবান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে স্থানীয়দের অবহিত করছি। করোনায় আতঙ্কিত না হয়ে নিজে সচেতন থাকুন, নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখুন। বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুবেন, ঘরেই থাকবেন এবং আল্লাহর দরবারে বেশি বেশি প্রার্থনা করবেন। সাবধানতা অবলম্বন করলেই পরিত্রাণ পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। আতঙ্কিত বা ভয়ের কিছু নেই।
দরিদ্র অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য সকল বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মানবিক এই মানুষটি বিনিয়োগ বার্তা’র প্রতিবেদককে বলেন, করোনা ভাইরাসের মহামারিতে আর্তমানবতার সেবায় সকল সামর্থবান যদি এগিয়ে আসে, তবেই দেশের প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফুটে উঠবে।
জাকির আহমেদ ব্যক্তি জীবনে ইসলামের ইতিহাসে এম,এ, এবং এল, এল,বি ও এল,এল এম পাশ করে ট্যাক্সেস বার আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন।
এছাড়া তিনি ঢাকা জেলা ক্রিড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক,বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের কার্যকরী সদস্য, কেরানীগঞ্জ উপজেলা ক্রিড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের তালিকাভুক্ত রেফারি, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক, আগানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং কেরানীগঞ্জ মহিলা ডিগ্রী কলেজ এর শিক্ষানুরাগী সদস্য।
বিনিয়োগ বার্তা//এল//